পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর থেকে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ ও সহিংসতা। এতে নিহত হয়েছেন ৮ জন, আটক হয়েছেন হাজারখানেক বিক্ষোভকারী। পুলিশের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
গতকাল বুধবার দুর্নীতির মামলায় ইমরানের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে দুর্নীতি দমন সংস্থা এনএবি ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল।
গত ৯ মে জামিন নিতে গিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার হন ইমরান খান। এ ঘটনায় চ্যালেঞ্জ জানাতে এসে একই স্থান থেকে গতকাল গ্রেফতার হন অন্য দুই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী ও আসাদ উমর।
পিটিআই নেতা ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর থেকে পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ চলছে, ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা। এই পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশজুড়ে পিটিআই কর্মীরা যে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তা ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।
এর মধ্যে ইসলামাবাদ, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার সেনা মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠায়। এতে লাহোর, মুলতান, রাওয়ালপিন্ডি, ফয়সলাবাদ ও অন্যান্য জেলা শহরের উল্লেখ করা হয়।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানান, পেশাওয়ারের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস বিক্ষোভ চলার সময় অন্তত ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, তারা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দাঙ্গাকারীদের ধরার চেষ্টা করছে।
গত বছর এপ্রিলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত হন ইমরান খান। এরপর থেকে তিনি আগাম নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
গত নভেম্বর মাসে সমাবেশ চলাকালে হত্যার চেষ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে দায়ী করেন ইমরান খান। এছাড়া হত্যাচেষ্টায় গোয়েন্দা বাহিনীর শীর্ষ এক কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগও তুলেছিলেন। মঙ্গলবার গ্রেফতার হওয়ার কিছুক্ষণ আগেও ভিডিও বার্তায় একই কথা বলেন।
এদিকে অর্থনৈতিক সংকটে বিধ্বস্ত পাকিস্তানের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংযম প্রদর্শন ও আইনের শাসন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, এরকম পরিস্থিতিতে সংযম প্রদর্শন ও মাথা ঠাণ্ডা রাখা দরকার। পাকিস্তানের যেসব চ্যালেঞ্জ তা মোকাবেলা এবং দেশটি কোন পথে যাবে তা একমাত্র পাকিস্তানের জনগণই নির্ধারণ করতে পারে। সেটা করতে হবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবং আইনের শাসন বজায় রেখে।